এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জের প্রধান সড়কের ভোরের হাটে এখন শীতের সবজির সরব উপস্থিতি। কৃষকের ক্ষেত থেকে সরাসরি বাজারে আসা সবজিতে জমে উঠেছে ক্রেতা–পাইকারদের কেনা-বেচা। ভোর থেকেই হাঁকডাকে জমজমাট হয়ে ওঠে অস্থায়ী এই সবজির হাট। এতে পাইকারি দরে বিক্রি হওয়া শীতকালীন সবজি সাময়িকভাবে বাজারে প্রবাহিত হলেও দাম কমতে দেখা যায়নি। কিছু সবজির দাম বাড়লেও, কিছু সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এবারের মৌসুমে মুন্সীগঞ্জে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। তবে, বাজারে পৌঁছানোর পর দাম বেশ চড়া হয়ে উঠেছে। নতুন আলুর কেজি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। প্রথমবারের মতো বাজারে ওঠা এই নতুন আলুর দাম নিয়ে ক্রেতারা বেশ হতাশ। অন্যদিকে, পুরোনো আলুর দাম হিমায়িত সংরক্ষিত অবস্থায় ১৫ থেকে ১৮ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
নতুন সবজির মধ্যে রয়েছে তাজা সীম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, লাউ, টমেটো এবং লাল শাক। তবে দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। কাঁচা মরিচের দাম ১২০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০ টাকা, টমেটো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সরবরাহ ভালো থাকার পরও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার কারণে ক্রেতারা হতাশ। শহরের শিলমন্দি এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, 'ভোরের হাটে দাম তুলনামূলকভাবে ভালো থাকে, কিন্তু সকাল ৮টার পর বাজারে গেলে দেখি দাম দ্বিগুণ। এটা সিন্ডিকেট ছাড়া কিছু নয়।'
কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে পাইকারি দাম সাধারণত সঠিক থাকে, তবে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন। আড়তদার রাজু মিয়া বলেন, 'ভোরের হাটে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে কারণ কৃষকরা সরাসরি এসে বিক্রি করেন। তবে পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন, যেটা আমরা থামাতে পারি না।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'এই মৌসুমে মুন্সীগঞ্জে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। সরবরাহ আরও বাড়লে বাজারে দামের ভারসাম্য আসবে।'
এছাড়া, আলুর বহুমুখী ব্যবহার এবং বিদেশে রফতানির উপর বেশি জোর দেওয়া উচিত বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক।
ভোরের এই অস্থায়ী হাটে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মেট্রিক টন সবজি বিক্রি হয়। তবে, দামের হেরফের দেখা যায় ভিন্ন ভিন্ন সবজির ক্ষেত্রে। ফুলকপি পিসপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় এবং লাউ ৩০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা ৫০ থেকে ৬০, খিরা ৭০ থেকে ৮০, জিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০, ধুন্দল ও কহি ৪০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
মসলাজাতীয় সবজির মধ্যে কাঁচা মরিচ ১২০ টাকায়, ধনেপাতা ১৮০ টাকায় এবং কেপসিকাম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, মৌসুমি আমলকির দাম কেজিতে ২৫০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।